সংবাদ
বাংলাদেশে ২১ এপ্রিলঃ মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ-আমেরিকায় ২০ এপ্রিল পবিত্র শবে বরাত

আগামী ২১ এপ্রিল রবিবার দিবাগত রাত বাংলাদেশে পবিত্র শবে বরাত উদযাপিত হবে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত ও পাকিস্তানে আগামী ২০ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত উদযাপিত হবে।
৫ এপ্রিল শুক্রবার পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে শনিবার রজব মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করা হয় এবং ৭ এপ্রিল রবিবার থেকে শাবান মাস আরম্ভ হয়। বাংলাদেশে ২৯শে রজব (৭ এপ্রিল, শনিবার) চাঁদ দেখা না যাওয়ায় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার রজব মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করা হয় এবং ৮ এপ্রিল সোমবার থেকে রজব মাস আরম্ভ হয়।
ভারত, পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশে শনিবার (৬ এপ্রিল) চাঁদ দেখা যাওয়ায় রবিবার (৭ এপ্রিল) থেকে শাবান মাস আরম্ভ হয়ে গেছে।
অবশ্য সৌদী আরবে ২৯শে রজব চাঁদ দেখা না গেলেও পূর্ব নির্ধারিত উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৬ এপ্রিল থেকেই শাবান মাস আরম্ভ হয়ে যায়।
শবে বরাত শব্দটি ফারসি। শব অর্থ হলো রাত বা রজনী; আর বরাত মানে ভাগ্য। একত্রে শবে বরাতের মানে ভাগ্য রজনী। আবার আরবিতে বলা হয় লাইলাতুল বারাআত। লাইলাতুন অর্থ হলো রাত আর বারাআতুন অর্থ হলো মুক্তি। একত্রে অর্থ হলো মুক্তির রাত।
শবে বরাত বলতে ইসলামে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে বুঝায়। হাদিসে এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বলে উল্লেখ হয়েছে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে রাত কাটিয়েছেন এবং এক বর্ণনায় তিনি এ রাতে জান্নাতুল বাকী কবরস্তান যিয়ারতে গেছেন।
হাদিস শরীফে এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিক নির্দেশনা রয়েছে। এ রাতে আল্লাহ তাআআ মুশরিক এবং বিদ্বেষী ব্যতিত সব অপরাধীকে ক্ষমা করে দেন। হজরত মুআয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান)
শবে বরাতকে উপলক্ষ করে ইবাদত বন্দেগিতে নিজেকে আত্ম-নিয়োগ না করে শুধুমাত্র রুসুম রেওয়াজ, সন্ধ্যা বেলায় গোসল, হালুয়া-রুটি বিতরণ, আলোকসজ্জা ইত্যাদি পালনে ইসলামের কোনো নির্দেশ নেই।
হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, ‘লাইলাতুন মিন নিসফি শাবান’ রাত নামাজে অতিবাহিত করা এবং পর দিন রোজা পালন করা।’ সুতরাং রুসুম রেওয়াজ পালন নয়, শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে হাদিসের ওপর আমল করতে নিজ গৃহে নামাজসহ নফল ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি কিছু সময় ঘুমানো এবং পরদিন রোজা পালন করা উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শবে বরাতের রুসুম রেওয়াজে নিজেদেরকে নিয়োজিত না করে নফল ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। শবে বরাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে হেফাজত করুন। আবার ইবাদত-বন্দেগি না করে তা ছেড়ে দেয়া থেকেও হেফাজত করুন। আমিন।