আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু’মিনীন, ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে (গতকাল ১১ মে) শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ পিকিং গার্ডেন-এ অনুষ্ঠিত আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে বক্তারা বলেন আমাদের গর্বের বিষয় হলো পূর্বসূরী বুযুর্গরা ছিলেন একই সাথে সুফী সাধক পাশাপাশি আল্লাহর পথের মুজাহিদ। এ সময় বক্তারা আরো বলেন, সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর দর্শন হলো একদিকে আত্মসংশোধন আরেকদিকে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা । তাঁর প্রতিষ্ঠিত তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া ইসলামের সঠিক চেতনাকে ধমনীতে ধারণ করতে সাহায্য করে। এই উপমহাদেশে সাইয়্যিদ আহমদের অনুসারীদের মাধ্যমে দ্বীনের বহুমুখী খিদমত হয়েছে। সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)-এর জীবনকাল মাত্র ৪৫ বৎসর। এ অল্প বয়সে তিনি যে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেচেন তা অবিস্মরণীয়। বৃটিশ লেখকরাও স্বীকার করেছে যে, তার প্রভাব এতো প্রবল ছিলো, তিনি যেখানে গিয়েছেন, সেখানেই লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর দ্বারা হেদায়েতের সন্ধান পেয়েছেন। তার প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে অপকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁর এতো ভক্ত-অনুরক্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি নেতৃত্বের মসৃন আসন ছেড়ে চলে গেলেন পাঞ্জাবে মজলুম মুসলমানদের উদ্ধার করতে। তাঁর জীবন গবেষণার মাধ্যমে আমরা উপকৃত হব। সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)-এর ইসলামী অনুশাসন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। তিনি একই সাথে আভ্যন্তরীণ সমস্যা শিরক-বিদআতের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন সাথে সাথে তিনি ইংরেজ ও শিখদের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হন।
আজকের প্রেক্ষাপটে সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) খুবই প্রাসঙ্গিক। বর্তমান সময়ে ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ সকল অপকর্ম বন্ধে ইসলামী অনুশাসনের পূর্ণ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সারা বিশে^র ইসলাম ও মুসলিম সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর চেতনা হতে পারে সমাধানের পথ।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা পাঠ্য পুস্তকে আল্লাহর ওলীদের জীবনী অন্তভূক্তির দাবি জানান।
বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আহ্বায়ক দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রুহুল আমীন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলীর উদ্ভোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন দ্বারীয়াপুরের পীর ছাহেব অধ্যাপক হাসান আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, ইসলামী আরবী বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা হাসান মাসুদ, মহাখালী হোসাইনিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম খান আল মারুফ, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ ঢাকা মহানগর সভাপতি মুফতী মাওলানা আবু নছর জিহাদী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. শাহ এমরান, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. ঈসা শাহেদী, নয়াটোলা কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজাউল হক, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা কুতবুল আলম, ঢাকা গাউছিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা এজহারুল হক, আহসানিয়া ইনিস্টিটিউট অব সুফিজম এর সহকারী অধ্যাপক শায়েখ মুহাম্মদ ওসমান গনি, পীর ছাহেব ফরাজীকান্দির নাতী ত্রৈ-মাসিক প্রত্যুষ-এর সম্পাদক মাওলানা মাসুক আহমদ, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাসুম আহমদ, অর্থ সম্পাদক খন্দকার ওজিউর রহমান আসাদ, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক সায়ীদ হুসাইন চৌধুরী।
বাংলাদেশে আনজুমানে আল ইসলাহ ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসেন সালেহীর পরিচালনায় মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেনÑ লতিফিয়া কারী সোসাইটির ঢাকা জেলা সভাপতি মাওলানা ইকবাল খন্দকার, কুলাউড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান শাহেদ, মদীনাতুল উলম কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহাবুবুল্লাহ, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর ঢাকা সহ-সাধারণ সম্পাদক ড. মাওলানা মোরশেদ আলম সালেহী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, কাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী প্রমুখ।