আল্লামা আবদুল জব্বার গোটারগ্রামী (রহ.) ও দুটি কারামত
সংকলনেঃ খায়রুল হুদা খান
এক.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
اتَّقُوا فِرَاسَةَ الْمُؤْمِنِ فَإِنَّهُ يَنْظُرُ بِنُورِ اللَّهِ
”তোমরা একজন মুমীনের অন্তদৃষ্টিকে ভয় করো। কেননা প্রকৃত মুমীন আল্লাহর (প্রদত্ত) নূর দিয়ে দেখে।“
শাইখুল হাদীস হযরত আল্লামা আবদুল জব্বার গোটারগ্রামী (রহ.) ছিলেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর অন্যতম খলীফা এবং বাদেদেওরাইল ফুলতলী আলিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস ও ভাইস প্রিন্সিপাল। ইন্তেকালের কয়েকদিন আগে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হযরত আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী (ছাহেবজাদায়ে ফুলতলী) ছাহেবের ঘর থেকে বের হয়ে আসছিলেন। এই সময় আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী ছাহেবের মহীয়সী মাতা (আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর সহধর্মিনী ও হযরত শাহ ইয়াকুব বদরপুরী (রহ.) এর ছাহেবজাদী) তাঁকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন “ইনি কি আবদুল জব্বার?”
আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী ছাহেব স্বীয় মাতার প্রশ্নে একটু বিস্মিত হলেন কারণ তাঁর মহীয়সী মাতা সংসারবিমুখী ও মজযূব হিসেবে মাওলার সান্নিধ্যে মশগুল থাকতেন। কারো সাথে খুব একটা কথা বলতেন না এবং তিনি আল্লামা আবদুল জব্বার ছাহেবকে চেনারও কথা নয়। যাই হোক, তিনি মায়ের প্রশ্নে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। তখন তাঁর মহীয়সী মা বলে উঠলেন, ”সে তো বেঁচে নেই।”
ঐ সময় মায়ের এ কথার অর্থ বুঝতে না পারলেও এর সপ্তাহ খানেকের ভেতরে আল্লামা আবদুল জব্বার (রহ.) এর ইন্তেকালে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর মজযূব মাতা ঐ সময় কেন এ কথা বলেছিলেন।
হাদীস শরীফে এসেছে, একজন মানুষের ইন্তেকালের আগেই তার নাম ফেরেশতা আযরাইল (আ.) এর কাছে প্রদান করা হয় এবং আল্লাহর ওলীগণ ‘ফিরাসাত‘ বা অন্তদৃষ্টির মাধ্যমে অনেক সময় আল্লাহর হুকুমে তা দেখতে পারেন।
দুই.
শাইখুল হাদীস আল্লামা আবদুল জব্বার (রহ.) ছিলেন ফুলতলী মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও মুহাদ্দিস। তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন ১৯৯৩ইং সালের ১লা অক্টোবর শুক্রবার জুমুআর সময়। ইন্তেকালের পূর্বের দিন বৃহস্পতিবার তিনি মাওলানা আবদুর রহীম ছাহেব (বর্তমানে ফুলতলী মাদরাসার অধ্যক্ষ) কে তাঁর কাছে থাকা মাদরাসার হিসেব-নিকেশ ও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। মাওলানা আবদুর রহীম ছাহেব ঐ সময় অবাক হলেও পরের দিনই বুঝতে পারলেন কেন আল্লামা গোটারগ্রামী (রহ.) আগের দিন সকল হিসেব-নিকেশ বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হাদীসে নববীর এই মহান খাদিমকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন এবং দিন দিন জান্নাতের মধ্যে তাঁর মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিন। আমীন।