সংবাদ

আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের ঈদে মীলাদুন্নবী কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

মুমিনমাত্রই আল্লাহর রাসূলের জন্মে খুশি প্রকাশ করে - আল্লামা বড় ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমনবার্ষিকী পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের উদ্যোগে ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের দ্যা অট্রিয়াম কনফারেন্স হলে গত ১০ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রান্ড মিলাদুন্নবী কনফারেন্স।

আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের প্রেসিডেন্ট আল্লামা হাফিজ আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ গ্রান্ড কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বড় ছাহেব কিবলাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হযরত বড়পীর আবদুল কাদির জিলানী (রহ) এর ১৯তম বংশধর, আওলাদে রাসূল হযরত শায়েখ সায়্যিদ আফীফুদ্দীন জিলানী বাগদাদী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ‘র প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) এর জীবনী আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো তাঁর ‘খুলুকে আজীম’ তথা সুমহান আদর্শে আদর্শিত হওয়া। এই খুলুকে আজীম আমাদেরকে শিক্ষা দেয় সেই দূরে ফেলে আসা প্রাণপ্রিয় জন্মভুমির বিপন্ন মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, নির্যাতিত-মজলুম মানুষদের খিদমতে নিয়োজিত হওয়া।

তিনি বলেন, রাহমাতুল লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ (সা) এসেছিলেন মানবজাতির ইহ-পরকালের মুক্তি দানের জন্য। সুতরাং তাঁর আগমন বিশ্ব মানবতার সবচেয়ে বড় খুশির কারণ। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূলের জন্মে খুশি প্রকাশ করেনা এমন কোন মুসলমান হতে পারে না। আলেম-উলামার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) এর প্রতি আক্বীদা-বিনষ্টকারী বই-পুস্তকের আজ অভাব নেই। সেগুলো থেকে আমাদেরকে সতর্ক থেকে সহীহ আকীদাভিত্তিক নির্ভরযোগ্য কিতাব অধ্যয়নে মনোনিবেশ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হযরত বড়পীর আবদুল কাদির জিলানী (রহ) এর ১৯তম বংশধর, আওলাদে রাসূল, হযরত শায়েখ সায়্যিদ আফীফুদ্দীন জিলানী বলেন, মীলাদুন্নবী এমন একটি বিষয় যা বিশ্ব-মুসলিমের মধ্যে দূরত্ব দূর করে তাদের অন্তরকে একীভূত করে তোলে। কারণ, আল্লাহর রাসূলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম হচ্ছে মীলাদুন্নবীর মত মাহফিলগুলো যেখানে আল্লাহর রাসূলের ভালোবাসা, তাঁর আলোচনা, তাঁর সুমহান চরিত্রের আলোচনা করা হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, আমরা রাসূলে পাক (সা.) এর মর্যাদা ও সম্মান আলোচনায় ঈদে মীলাদুন্নবী মাহফিলের আয়োজন করে থাকি। তিনি বলেন, একজন মুমিনের ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক জীবন, পারিবারিক জীবন তথা সর্বক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনুসরণের কোন বিকল্প নেই।

Miladun Nabi London লন্ডনে মীলাদুন্নবী

আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের সেক্রেটারি মাওলানা মোহাম্মদ হাসান চৌধুরীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা ফরিদ আহমদ চৌধুরী ও আল ইসলাহ ইয়ুথ ফোরামের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা সাইদ আহমদ এর যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে আরো উপস্থিত ছিলেন মুসলিম হ্যান্ডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং স্কুল অব এক্সেলেন্স সিলেটের প্রিন্সিপাল মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্রিকলেন জামে মসজিদের খতীব হযরত মাওলানা নজরুল ইসলাম, লাতিফিয়া উলামা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মাওলানা শিহাব উদ্দিন, সাবেক সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দীন নূরী, লাতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি ইউকের প্রেসিডেন্ট মুফতী ইলিয়াস হোসাইন, সেক্রেটারি মাওলানা মুফতী আশরাফুর রহমান, দারুল হাদীস লাতিফিয়া নর্থওয়েস্টের প্রিন্সিপাল মাওলানা সালমান আহমদ চৌধুরী, বৃটিশ মুসলিম স্কুল বার্মিংহাম এর প্রিন্সিপাল মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা সাদ উদ্দীন সিদ্দিকী, মাওলানা ফখরুল হাসান রুতবাহ, টাওয়ার হ্যামলেটসের ডেপুটি মেয়র সিরাজুল ইসলাম, স্থানীয় কাউন্সিলর আহবাব হোসাইন, চ্যানেল এস এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাজ চৌধুরী, দারুল হাদীস লাতিফিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল কাহহার, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, আলহাজ বশির উদ্দিন, আনজুমানে আল ইসলাহ গ্রেটার লন্ডন ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট হাফিজ মোহাম্মদ কয়েছুজ্জামান, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, গ্রেটার ম্যানচেস্টার ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট মাওলানা আবদুল মতিন, সেক্রেটারি মাওলানা খায়রুল হুদা খান, ইস্ট ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট আলহাজ আবদুস সালাম, সেক্রেটারি মাওলানা কাওসার আহমদ, আল ইসলাহ ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট হাফিজ মাওলানা আনহার আহমদ, সেক্রেটারি মাওলানা মারুফ আহমদ, হাফিজ সাব্বির আহমদ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, আলহাজ খুরশিদুল হক, আলহাজ ইমদাদ হোসাইন, মাওলানা সৈয়দ মাহমুদ হোসাইন, মাওলানা ফয়সল আহমদ, হাফিজ আসকির মিয়া, আলহাজ ছদরুল আমীন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, হাজী সিরাজ খান, আফতাব আহমদ প্রমুখ।

গ্রান্ড কনফারেন্সে ইউকের বিভিন্ন শহর থেকে আনজুমানে আল ইসলাহর নেতা-কর্মী, উলামায়ে কিরামসহ সহস্রাধিক নবী প্রেমিক মুসলিম জনতা উপস্থিত হন। মাহফিলে দারুল হাদীস লাতিফিয়ার শিক্ষার্থীগণ এবং শামসুদ্দোহা শিল্পী গোষ্ঠির সদস্যগণ সুললিত কন্ঠে নাতে রাসূল পরিবেশন করে উপস্থিত নবী-প্রেমিকের হৃদয় ইশকে রাসূলে উদ্বেলিত করে তুলে।

গ্রান্ড ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) কনফারেন্স উপলক্ষে রাসূলে পাক (সা.) এর উপর দশ মিলিয়ন দুরুদ পাঠের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং এতে ব্যাপক সাড়া মিলে এবং দশ মিলিয়ন এর বেশি দুরুদ পাঠের রিপোর্ট পাওয়া যায়।

Related Articles